গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নে দশ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি ২০১৬ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর সাধারণ মানুষ ধারণা করেছিলেন দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসা সেবা চালু হবে। এতে এলাকাবাসী খুব সহজেই সেবা পাবেন। মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমবে। কিন্তু এলাকাবাসীর সেই আশা অপূর্ণই থেকে গেল। এই কেন্দ্রে কবে নাগাদ পুরোদমে চিকিৎসাসেবা চালু হবে কেউ জানে না। তিন তলা বিশিষ্ট কেন্দ্রটির ফটক,বারান্দা ও ভবনের আঙিনা চলে গেছে নার্সারী ব্যবসায়ীদের দখলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরমী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের উত্তর পাশে তিন তলা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবনটি অবস্থিত। এর ফটকের ছোট একটি গলি রেখে দুই পাশে বিভিন্ন গাছের চারা রাখা। ফটকের ভেতরে প্রবেশ করার পর দেখা যায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মূল ভবনের প্রবেশ পথ ও বারান্দা থেকে শুরু করে আশপাশ জুড়ে বিপুল পরিমাণ গাছের চারা রাখা। দেখে মনে হয় বিশাল নার্সারির ভেতর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবনটি অবস্থিত। ভবনের ভিতর প্রবেশ করে নিচতলায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মীদের দেখা গেছে। তারা সীমিত পরিসরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাধারণ রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন। ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা অব্যবহৃত পড়ে আছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক প্রান্তিক পর্যায়ে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণের অংশ হিসেবে শ্রীপুরের বরমী এলাকায় তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করে। এতে মা ও শিশুর জন্য আলাদা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ, অস্ত্রোপাচারের জন্য অপারেশন থিয়েটার ও ল্যাব স্থাপন করার কথা সেখানে শয্যা, যন্ত্রপাতি ও আনুষঙ্গিক উপকরণ দেওয়া হয়নি। চিকিৎসকের দুটি পদ থাকলেও ছয় বছরে তা পূরণ করা হয়নি। শূন্য পড়ে আছে সিস্টারের ৪টি পদ। এছাড়া ভিজিটরের ৩ টি, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ৩টি পদও শূন্য।
স্থানীয়রা জানান, ভবন নির্মাণের পর দীর্ঘদিন ধরে সেটি তালাবদ্ধ ছিল। গত ২০২১ সালে অব্যবহৃত পড়ে থাকা ওই ভবনে সীমিত পরিসরে সেবা দেওয়া শুরু করে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। সেখানে একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা দেওয়া হয়। তিনি ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে বসে সাধারণ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেন। চিকিৎসক ও অন্যান্য পদে লোকজন না থাকায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটির মূল কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। ফলে সেখানে লোকসমাগম নেই বললেই চলে । এই সুযোগে ভবনের ফটক ও আশপাশে নার্সারি স্থাপন করে ব্যবসা করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি।
১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, চিকিৎসক ও অন্যান্য পদে লোকবল নিয়োগ দিলেই কার্যক্রম শুরু করা যাবে । শ্রীপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. জামাল উদ্দিন আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, লোকবল সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পুরোদমে চালু করা যাচ্ছে না। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করছি দ্রæত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিবেন।